আপনি কি পেট ফাঁপা থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানতে চান।
যদি জানতে চান, তাহলে আপনি ঠিক জায়গায় এসেছেন।
আমি এই পোস্টটিতে আপনার সাথে শেয়ার করছি – পেট ফাঁপা থেকে মুক্তির উপায়, পেট ফাঁপা হলে কি করনীয়, পেট ফাঁপার লক্ষণ, পেট ফাঁপার কারণ, পেট ফাঁপার আনুষঙ্গিক চিকিৎসা ইত্যাদি।
আশা করি এই পোস্টটি আপনার উপকারে আসবে।
পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল
পেট ফাঁপা হলে কি করনীয়
প্রথমে আমরা পেট ফাঁপা রোগের বিবরণ, আক্রান্ত তন্ত্র, আক্রমণের বয়স, আক্রান্ত লিঙ্গ সম্পর্কে জানব।
রোগের বিবরণ
আমাদের শরীরের পাকস্থলী বা অন্ত্রে বায়ু সঞ্চয় হয়ে পেট ফুলে ওঠে। এই পেট ফুলে ওঠাকে পেটফাঁপা বা Flatulence ( ফ্ল্যাটুলেন্স ) বলা হয়।
আক্রান্ত তন্ত্র
মানবদেহের পৌষ্টিকতন্ত্র এই রোগের দ্বারা আক্রান্ত হয়।
আক্রমণের বয়স
এই রোগ হওয়ার জন্য কোন নির্দিষ্ট বয়স নেই। ছোট থেকে বড় সকলেরই এই রোগ হতে পারে। পেট ফাঁপা রোগ যে কোন বয়সেই হতে পারে।
আক্রান্ত লিঙ্গ
স্ত্রী এবং পুরুষ উভয়েরই পেট ফাঁপা রোগ সমানভাবে হতে দেখা যায়।
পেট ফাঁপার কারণ
১। অজীর্ণ ও অম্লরোগে ভোগা এই রোগের কারণ।
২। পায়খানা পরিস্কার না হওয়া।
৩। ক্রনিক আমাশয়ে ভোগা।
৪। আমিষ জাতীয় খাদ্য বেশি খাওয়া এই রোগের কারণ হতে পারে।
৫। অতিরিক্ত তেল, ঝাল, মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া।
৬। রাত্রি জাগরণ।
৭। কৃমি রোগে ভোগা প্রভৃতি থেকে পেটফাঁপা রোগ হতে পারে।
পেট ফাঁপার লক্ষণ
১। সমগ্র পেট উঁচু হয়ে ফুলে উঠে এমনকি চেয়েও উঁচু হয়ে যেতে পারে।
২। পেটে আঙুলের ঢোকা মাড়লে ঢপ ঢপ শব্দ হয়। এমনকি পেটে ভুটভাট – গুড়গুড় শব্দ হতে থাকে।
৩। পাতলা পায়খানা অথবা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
৪। বুকে চাপ বোধ, শ্বাসকষ্ট, অস্বস্তি ভাব এবং পাঁজরের নিচে কনকনানি ভাব হতে থাকে।
৫। গা বমি এবং ক্ষুধামন্দা প্রভৃতি হতে দেখা যায়।
৬। বুক ধরপড়ানি, মাথা ও কপাল ভারী হওয়া এবং যন্ত্রনা হওয়া প্রভৃতি থাকে।
৭। পেটে খোঁচানো যন্ত্রনা হয়।
৮। গ্যাস অন্ত্রের ভিতর দিয়ে চলাচলের অনুভূতি প্রকাশ পায়। মাঝে মাঝে বায়ু সরে।
৯। পেট খুব বেশি ফেঁপে গেলে মল – মূত্র ত্যাগে বাধার সৃষ্টি করে।
পেট ফাঁপার আনুষঙ্গিক চিকিৎসা
ঔষধের পরিবর্তে একটি ভাল মিক্সার তৈরি করে নিয়মিত খেতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
১। Sodium – bi – carbonate – 10 gm ( সোডিয়াম বাই কার্বোনেট – ১০গ্রাম )
২। Light – Magnesium – Carbonate – 4 gm ( লাইট ম্যাগনেসিয়াম কার্বোনেট – ৪ গ্রাম )
৩। Spirit – Chloroform – 6 ml ( স্পিরিট ক্লোরোফর্ম – ৬ মিলি )
৪। Spirit Ammon – Aromate – 4 ml ( স্পিরিট অ্যামল অ্যারোমেট – ৪ মিলি )
৫। Aqua – Ptychotics – 6 ml ( অ্যাকোয়া টাইকোটিস – ৬ মিলি )
৬। Tincture Cardamom – Co – 10 ml ( টিংচার কারডামম – কো – ১০ মিলি )
৭। Tincture Zingiberis – 6 ml ( টিংচার জিনজিবারিস – ৬ মিলি )
৮। Water – 10z ( ওয়াটার বা জল ১ আউন্স )
এই মিশ্রণ ২ – ৩ চামচ করে দিনে ৩ বার খাবার পর খেলে বায়ু নিঃসরণ ভাল হয় এবং পেট ফাঁপা কমে যায়। এই মিশ্রণ তৈরি করলে লিকুইড উপকরণ সমূহ Bengal Chemicals – এর উৎপাদন হলে ভাল হয়।
১। সরষের তেল পেটে মালিশ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
২। সাবান জলে মিশিয়ে পেটে মালিশ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
৩। কোষ্ঠ পরিস্কার রাখতে জল বেশি পরিমাণে খেতে হবে।
৪। প্রয়োজনে ইসবগুলের ভুসি মিছরি ভেজানো জলে ফেলে খাওয়া ভালো।
৫। ফল – মূল, শাকসবজি অল্প অল্প খেতে হবে।
৬। মশলাদার খাবার খাওয়া চলবে না।
৭। মাছ – মাংস প্রভৃতি না খাওয়াই ভাল।
নোট
অবশেষে বলব আপনার যদি কোন পেট ফাঁপা জনিত কোন সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই একজন উপযুক্ত ডাক্তারের পরামর্শ নিন অবহেলা না করে।
আরও পড়ুন – ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায়
আরও পড়ুন – হাঁপানি রোগ থেকে বাঁচার উপায়
আমি এই পোস্টটিতে পেট ফাঁপা রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। পেট ফাঁপা থেকে মুক্তির উপায়, পেট ফাঁপা কমানোর উপায়, পেট ফাঁপার কারণ, পেট ফাঁপার লক্ষণ, পেট ফাঁপার আনুষঙ্গিক চিকিৎসা প্রভৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
আশা করি এই পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে এসেছে।
সবার উপকারের জন্য পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না