ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ

পোস্টটি শেয়ার করুন

আপনি কি ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ সম্পর্কে জানতে চান।

যদি জানতে চান,

তাহলে আপনি সঠিক পোস্টে এসে পৌঁছেছেন।

আমি এই পোস্টটিতে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি – ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ, ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ কি কি, ভাইরাস ঘটিত রোগের নাম।

আশা করি এই পোস্টটি থেকে আপনি অনেক কিছু জানতে পারবেন।

ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগের নাম, ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ কি কি

আমি প্রথমে আপনাকে ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগের নাম , রোগের কারণ, রোগ ছড়ানোর মাধ্যম, প্রয়োজনীয় সময় সম্পর্কে জানাবো।

ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগগুলি হলো – ব্রুচেলেসিস, কলেরা, নিউমোনিয়া, স্কারলেট জ্বর, সিফিলিস,  টিটেনাস, যক্ষা, টাইফয়েড জ্বর, হুপিং কাশি, ডিপথোরিয়া, গনোরিয়া, কুষ্ঠ, মেনিনজাইটিস, প্যারাটাইফয়েড জ্বর ইত্যাদি ।

ব্রুচেলেসিস

রোগের নাম – ব্রুচেলেসিস।

রোগের কারণ – ব্রুচেলেসিস অ্যাবরটাস টাস বা ব্রুচেলাস মেলিটিউসিস ব্যাকটেরিয়া।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – গরু এবং ছাগল।

প্রয়োজনীয় সময় – ৩ – ৬ বছর।

কলেরা

রোগের নাম – কলেরা।

রোগের কারণ – ব্যাকটেরিয়া ভিব্রিও কলেরি।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রমণ হয় জীবাণু- যুক্ত জলের ও সমুদ্রের খাদ্যের মাধ্যমে।

প্রয়োজনীয় সময় – কয়েক ঘণ্টা থেকে ৫ দিন।

নিউমোনিয়া

রোগের নাম – নিউমোনিয়া।

রোগের কারণ – ব্যাকটেরিয়া স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনিয়া দ্বারা এই রোগ হয়।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – মানুষের শরীর থেকে নিঃসৃত যেকোন ব্যাকটেরিয়া দ্বারা রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ১ – ৩ সপ্তাহের মধ্যে।

স্কারলেট জ্বর

রোগের নাম – স্কারলেট জ্বর।

রোগের কারণ – ‘ এ ‘ শ্রেণীর রক্ত ভাঙনকারী স্ট্রেপটোকক্কাস ব্যাকটেরিয়া।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রামক ব্যাক্তির সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ১ – ৫ দিনের মধ্যে।

সিফিলিস

রোগের নাম – সিফিলিস।

রোগের কারণ – ব্যাকটেরিয়া ট্রেয়েপোনিয়া প্যালিডাম দ্বারা এই রোগ হয়।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – যৌন সম্পর্কে উন্মুক্ত ঘায়ের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শে , রক্তদানের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ১০ – ৯০ দিনের মধ্যে।

টিটেনাস

রোগের নাম – টিটেনাস ( বদ্ধ চোয়াল )।

রোগের কারণ – ব্যাসিলাস ব্যাকটেরিয়া ক্লসট্রিডিয়াম দ্বারা এই রোগ হয়।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – প্রাণীর মল ও মাটির মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ৩ – ২১ দিনের মধ্যে।

যক্ষা

রোগের নাম – যক্ষা।

রোগের কারণ – ব্যাকটেরিয়া মাইকোব্যাকটেরি – য়াম টিউবার কুলোসিস দ্বারা এই রোগ হয়।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রামিত ব্যাক্তির হাঁচি ও কাশি থেকে সংক্রামণ হয়।

প্রয়োজনীয় সময় – সময় ব্যবধানে পরিবর্তিত হয়।

টাইফয়েড জ্বর

রোগের নাম – টাইফয়েড জ্বর।

রোগের কারণ – ব্যাসিলাস ব্যাকটেরিয়া সালমোনেল্লা টাইফি দ্বারা এই রোগ হয়।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রামিত জ্বল ও খাদ্যের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ৭ – ২১ দিনের মধ্যে।

হুপিং কাশি

রোগের নাম – হুপিং কাশি ( পারটুসিস )।

রোগের কারণ – ব্যাকটেরিয়া বরডেটেল্লা পারটুসিস দ্বারা এই রোগ হয়।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – বায়ুবাহিত রোগ যা আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি , কাশির মাধ্যমে ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ১০ – ২১ দিনের মধ্যে।

ডিপথোরিয়া

রোগের নাম – ডিপথোরিয়া।

রোগের কারণ – ব্যাকটেরিয়া কোরিনি ব্যাকটেরি – য়াম ডিপথোরিয়া দ্বারা এই রোগ হয়।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রামিত ব্যক্তির শ্বাস – প্রশ্বাসের এবং লালার মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ২ – ৬ দিনের মধ্যে।

গনোরিয়া

রোগের নাম – গনোরিয়া।

রোগের কারণ – নাইসেরিয়া গনোরি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা এই রোগ হয়।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রামক রোগীর মূত্র নালি ও যোনী পথ থেকে ক্ষরিত তরল পদার্থ দ্বারা সংক্রামণ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ৩ – ৮ দিনের মধ্যে।

কুষ্ঠ

রোগের নাম – কুষ্ঠ।

রোগের কারণ – ব্যাসিলাস ব্যাকটেরিয়া মাইকো – ব্যাকটেরিয়াম লেপ্রি দ্বারা এই রোগ হয়।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রামক ব্যাক্তির দ্বারা এই রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – সময় কমবেশি হয়।

মেনিনজাইটিস

রোগের নাম – মেনিনজাইটিস।

রোগের কারণ – অনেক সংখ্যাক ব্যাকটেরিয়া ( ব্যাকটেরিয়াল মেনিজাইটিস)দ্বারা এই রোগ হয়।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – ব্যাকটেরিয়া দ্বারা এই রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – সৃষ্টিকারী জীবাণুর সঙ্গে সঙ্গে রোগের জন্য প্রয়োজনীয় সময় বদলায়।

প্যারাটাইফয়েড জ্বর

রোগের নাম – প্যারাটাইফয়েড জ্বর।

রোগের কারণ – স্যালমোনেল্লা ব্যাকটেরিয়া।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রামক জল ও খাদ্য খেলে এই রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ১ – ১৪ দিনের মধ্যে।

আরও পড়ুন – চোখের রোগ সুমুহ 

ভাইরাস ঘটিত রোগ,ভাইরাস ঘটিত রোগের নাম

এবার আমরা ভাইরাস ঘটিত রোগের নাম, রোগের কারণ , রোগ ছড়ানোর মাধ্যম, প্রয়োজনীয় সময় সম্পর্কে জেনে নব।

ভাইরাস ঘটিত রোগগুলি হলো – এডস, গুটিবসন্ত, সাধারণ ঠাণ্ডা লাগা, পোলিও মাইলেটিস, জলাতঙ্ক, রুবেলা, প্রসার্স, সিনগেলস, জলবসন্ত, পীতজ্বর, এনকেফেলাইটিস,  হেপাটাইটিস বি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাম, মাম্পস, মেনিনজাইটিস ইত্যাদি ।

এডস

রোগের নাম – এডস ( আকোয়ার্ড ইমিউন ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম )।

রোগের কারণ – হিউম্যান ইমিউনো ডেফি – সিয়েন্সি ভাইরাস ( এইচ আই ভি )।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – যৌনসংযর্গের ফলে, একই সিরিঞ্জ ব্যবহার করার ফলে, রক্ত দানের সময়।

প্রয়োজনীয় সময় – বেশ কিছু বছর।

গুটিবসন্ত 

রোগের নাম – গুটিবসন্ত ( ভারিসেলা )।

রোগের কারণ – ভারিসেলা জাস্টার ভাইরাস ( ইউ এস ) হারপিস জাস্টার ভাইরাস (ইউ কে)।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – রোগগ্রস্ত মানুষের থেকে ও তার জিনিসপত্র থেকে, এছাড়া তার শরীর থেকে নিস্কাশিত শ্লৈষ্মিক পর্দা দ্বারা জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে।

প্রয়োজনীয় সময় – ১০ – ২১ বছরের মধ্যে।

সাধারণ ঠাণ্ডা লাগা

রোগের নাম – সাধারণ ঠাণ্ডা লাগা।

রোগের কারণ – বহু সংখ্যক বিভিন্ন ভাইরাস দ্বারা।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রামক ব্যাক্তির হাঁচি, কাশি ও শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে।

প্রয়োজনীয় সময় – ১ – ৪ দিনের মধ্যে।

পোলিও মাইলেটিস

রোগের নাম – পোলিও মাইলেটিস।

রোগের কারণ – পোলিও ভাইরাস।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রামক রোগীর নাক ও গলার ক্ষরণ পদার্থের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে ও বমির সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ৭ – ২১ দিনের মধ্যে।

জলাতঙ্ক

রোগের নাম – জলাতঙ্ক।

রোগের কারণ – ভাইরাস।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রামিত প্রাণীর কামড়ের মাধ্যমে এই রোগ হয়।

প্রয়োজনীয় সময় – ৬ – ১০ দিনের মধ্যে।

রুবেলা

রোগের নাম – রুবেলা (জার্মান হাম)।

রোগের কারণ – রুবেলা ভাইরাস।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – নাক ও গলার ক্ষরিত, যা সংক্রামিত ব্যক্তির দেহ থেকে নিঃসৃত হয় তার মাধ্যমে ছড়ায় বা সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমেও রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ১৪ – ২১ দিনের মধ্যে।

প্রসার্স

রোগের নাম – প্রসার্স।

রোগের কারণ – সার্সের সঙ্গে সংযুক্ত করোনা ভাইরাসের মাধ্যমে এই রোগ হয়।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রামক ব্যাক্তির সঙ্গে সরাসরি স্পর্শের মাধ্যমে ও শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ২ – ৭ দিনের মধ্যে।

সিনগেলস

রোগের নাম – সিনগেলস।

রোগের কারণ – ভারিসেলা জাস্টার ভাইরাস (ইউ এস), হারপিস জাস্টার ভাইরাস (ইউ কে)।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – রোগগ্রস্ত মানুষের থেকে ও তার জিনিসপত্র থেকে এছাড়া তার শরীর থেকে নিষ্কাশিত শ্লৈষ্মিক পর্দা দ্বারা জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে।

প্রয়োজনীয় সময় – ২ – ৭ দিনের মধ্যে।

জলবসন্ত

রোগের নাম – জলবসন্ত।

রোগের কারণ – বসন্ত ভাইরাস ভ্যারিওলা।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সরাসরি সংস্পর্শের সংক্রামনের মাধ্যমে।

প্রয়োজনীয় সময় – ৭ – ১৪ দিনের মধ্যে।

পীতজ্বর

রোগের নাম – পীতজ্বর।

রোগের কারণ – আরবোভাইরাস।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রামক মশার কামড়ের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ৩ – ৬ দিনের মধ্যে।

এনকেফেলাইটিস

রোগের নাম – এনকেফেলাইটিস।

রোগের কারণ – ভাইরাস দ্বারা।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – রোগগ্রস্ত মশার কামড়ের দ্বারা এই রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ৪ – ২১ দিনের মধ্যে।

হেপাটাইটিস বি

রোগের নাম – হেপাটাইটিস বি।

রোগের কারণ – হেপাটাইটিস এ ভাইরাস।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রামক জল ও খাদ্য দ্বারা পরিবাহিত হয়।

প্রয়োজনীয় সময় – ১৫ – ৫০ দিনের মধ্যে।

হেপাটাইটিস বি

রোগের নাম – হেপাটাইটিস বি।

রোগের কারণ – হেপাটাইটিস বি ভাইরাস।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – দূষিত রক্তের মাধ্যমে ও ইনজেকশনের মাধ্যমে।

প্রয়োজনীয় সময় – ৬ সপ্তাহ থেকে ৬ মাস।

ইনফ্লুয়েঞ্জা

রোগের নাম – ইনফ্লুয়েঞ্জা।

রোগের কারণ – ভাইরাসের ধরন এ.বি.সি।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – সংক্রামিত ব্যক্তি, পাখি, শুকর, ঘোড়া এবং সীল থেকে ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ১ – ৪ দিনের মধ্যে।

হাম 

রোগের নাম – হাম (রুবিওলা)।

রোগের কারণ – রুবিওলা ভাইরাস।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – ভাইরাস দ্বারা ও সংক্রামিত ব্যক্তি দ্বারা এই রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – ১০ – ১৫ দিনের মধ্যে।

মাম্পস

রোগের নাম – মাম্পস।

রোগের কারণ – ভাইরাস।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – ভাইরাস দ্বারা ।

প্রয়োজনীয় সময় – ১৪ – ২১ দিনের মধ্যে।

মেনিনজাইটিস

রোগের নাম – মেনিনজাইটিস।

রোগের কারণ – অনেক সংখ্যক ভাইরাস (ভাইরাল ম্যানিনজাইটিস) দ্বারা এই রোগ হয়।

রোগ ছড়ানোর মাধ্যম – ভাইরাস সংক্রমণের ফলে এই রোগ ছড়ায়।

প্রয়োজনীয় সময় – সৃষ্টিকারী জীবাণুর সঙ্গে সঙ্গে রোগের জন্য প্রয়োজনীয় সময় বদলায়।


আরও পড়ুন ক্লিক করে – 

কম্পিউটার সম্পর্কিত সাধারণ জ্ঞান 

 পেট ফাঁপা থেকে মুক্তির উপায় 

বদহজমের কারণ ও তার প্রতিকার 


আমি উপরে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। 

আশা করি আপনি এই পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে এসেছে।

আশা করি ভাইরাস ঘটিত রোগব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ কি কি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই পোস্টটি পড়ার জন্য।

ভালো লাগলে বন্ধু – বান্ধবের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।


পোস্টটি শেয়ার করুন

1 thought on “ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ”

Leave a Comment