চোখের রোগ সমূহ

চোখের রোগ সমূহ। চোখের বিভিন্ন অংশ।

পোস্টটি শেয়ার করুন

চোখের রোগ সমূহ। চোখের বিভিন্ন রোগ।চোখের বিভিন্ন রোগের নাম।

আপনি কি চোখের রোগ সমূহ ও তার সংশ্লিষ্ট তথ্য এবং চোখের বিভিন্ন অংশ ও চোখের বিভিন্ন অংশের কাজ সম্পর্কে জানতে চান।

যদি জানতে চান, তাহলে আপনি সঠিক আর্টিকেল এ এসেছেন।

আমি এই পোস্টটিতে আপনাকে চোখের রোগ সমূহ ও তার সংশ্লিষ্ট তথ্য এবং চোখের বিভিন্ন অংশচোখের বিভিন্ন অংশের কাজ সম্পর্কে আলোচনা করব।

আশা করি এই আর্টিকেল টি আপনার উপকারে আসবে।

আর্টিকেল টি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।

চোখের রোগ সমূহ। চোখের বিভিন্ন রোগ।চোখের বিভিন্ন রোগের নাম।

আমি প্রথমে চোখের রোগ সমূহ, চোখের বিভিন্ন রোগ, চোখের বিভিন্ন রোগের নাম ও তার সংশ্লিষ্ট তথ্য সম্পর্কে জানব।

দূরবদ্ধ দৃষ্টি বা হাইপারমেট্রোপিয়া

রোগ –  – দূরবদ্ধ দৃষ্টি বা হাইপারমেট্রোপিয়া।

সংশ্লিষ্ট তথ্য – যে দৃষ্টিতে নিকটের দৃষ্টি ব্যাহত হয়, কিন্তু দূরের দৃষ্টি ঠিক থাকে তাকে দূরবদ্ধ দৃষ্টি বা হাইপারমেট্রোপিয়া বলে।

চক্ষুগোলকের ব্যাস স্বাভাবিকের তুলনায় ছোট হওয়ায় বস্তুর প্রতিবিম্ব রেটিনার পশ্চাতে পড়ে, ফলে কাছের বস্তু দেখা যায় না। উওল লেন্স যুক্ত চশমা ব্যবহার করলে এই রোগ সারে।

নিকটবদ্ধ দৃষ্টি বা মায়োপিয়া

রোগ – নিকটবদ্ধ দৃষ্টি বা মায়োপিয়া।

সংশ্লিষ্ট তথ্য – যে দৃষ্টিতে দূরের দৃষ্টি ব্যাহত হয়, কিন্তু নিকটের দৃষ্টি ঠিক থাকে তাকে নিকটবদ্ধ দৃষ্টি বা মায়োপিয়া বলে। 

 চক্ষুগোলকের ব্যাস স্বাভাবিকের তুলনায় বর্ধিত হওয়ার ফলে বস্তর প্রতিবিম্ব রেটিনার সামনে পড়ে, ফলে দূরের বস্তু দেখা যায় না। অবতল লেন্স যুক্ত চশমা ব্যবহার করলে এই রোগ সারে।

একনেত্র দৃষ্টি

রোগ – একনেত্র দৃষ্টি।

সংশ্লিষ্ট তথ্য – যখন একসঙ্গে দুটি চোখ দিয়ে আলাদা বস্তুর প্রতিবিম্ব দেখা যায়, তখন সেই রকম দৃষ্টিকে একনেত্র দৃষ্টি বলে।

এই রকম দৃষ্টিতে বস্তুর সঠিক আকার ও অবস্থান নির্ণয় করা যায় না। উদাহরণ – ব্যাঙ, গরু, ঘোড়া ইত্যাদি। শিকারি পাখি ছাড়া অন্যান্য পাখিদেরও এরুপ দৃষ্টি।

দ্বিনেত্র দৃষ্টি

রোগ – দ্বিনেত্র দৃষ্টি।

সংশ্লিষ্ট তথ্য – যখন একসঙ্গে দুটি চোখ দিয়ে একই বস্তুর প্রতিবিম্ব দেখা যায় তখন তাকে দ্বিনেত্র দৃষ্টি বলে।

এরুপ দৃষ্টির সাহায্যে বস্তুর সঠিক আকার এবং অবস্থান নির্ণয় করা যায়। উদাহরণ – মানুষ, বানর, বাঘ, বাজপাখি, পেঁচা ইত্যাদি।

বর্ণান্ধ

রোগ – বর্ণান্ধ।

সংশ্লিষ্ট তথ্য – যে সব ব্যক্তি রং দেখতে পায় না, বিশেষ করে লাল – সবুজ এবং হলুদ – নীল – এরকম ব্যক্তিদের বর্ণান্ধ বলে। 

সাধারণত রেটিনায় কোণ কোষের সংখ্যা কম থাকলে বা কোণ কোষ মধ্যস্থ রঞ্জক পদার্থ না থাকলে এই রোগ দেখা যায়।

রাতকানা

রোগ – রাতকানা।

সংশ্লিষ্ট তথ্য – যে সব ব্যক্তি রাতে দেখতে পায় না তাদের রাতকানা বলে। রেটিনায় রড কোষের সংখ্যা কম থাকলে এই রোগ হয়।  প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ভিটামিন – এ রড কোষের একটি বিশেষ উপাদান।

পুঞ্জাক্ষি

রোগ – পুঞ্জাক্ষি।

সংশ্লিষ্ট তথ্য – বেশিরভাগ প্রাণীরই চোখ সরলাক্ষি কিন্তু সন্ধিপদ পর্বের অন্তর্গত প্রাণীদের (মাকড়সা ছাড়া) এক – একটি চোখ অনেকগুলি সরলাক্ষি নিয়ে গঠিত, এরকম চোখকে পুঞ্জাক্ষি বলে।

ছানি বা ক্যাটারাক্ট

রোগ – ছানি বা ক্যাটারাক্ট।

সংশ্লিষ্ট তথ্য – বৃদ্ধ বয়সে লেন্স – এর ওপর বিশেষ এক পর্দার আবির্ভাব হওয়ায় লেন্স ঘোলাটে হয়ে যায়, একে ছানি বা ক্যাটারাক্ট বলে। অস্ত্রোপচারের করে বিশেষ লেন্স ব্যবহারে দৃষ্টি শক্তি আবার ফিরে আসে।

গ্লুকোমা

রোগ – গ্লুকোমা।

সংশ্লিষ্ট তথ্য – অক্ষিগোলকের জলীয় পদার্থ নির্গত হতে না পারলে চোখের ভিতরে চাপ সৃষ্টি হয় ফলে যে রোগ সৃষ্টি হয় তাকে গ্লুকোমা বলে। এই প্রকার রোগে মানুষ অন্ধ হয়ে যায়।

চোখের বিভিন্ন অংশ, চোখের বিভিন্ন অংশের কাজ, চোখের বিভিন্ন অংশের নাম বাংলায়,

এবার আমরা চোখের বিভিন্ন অংশ, চোখের বিভিন্ন অংশের কাজ, চোখের বিভিন্ন অংশের নাম বাংলায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নব।

স্ক্লেরা

চক্ষুর অংশ – স্ক্লেরা।

অবস্থান – অক্ষিগোলকের পশ্চাদভাগে অবস্থিত বহিরাবরক।

প্রধান কাজ – অক্ষিগোলকের পশ্চাদভাগে অন্যান্য স্তরকে রক্ষা করে।

কোরোয়েড

চক্ষুর অংশ – কোরোয়েড।

অবস্থান – অক্ষিগোলকের পশ্চাদভাগে অবস্থিত মধ্য আবরক।

প্রধান কাজ – রেটিনাকে রক্ষা করে এবং বিচ্ছুরিত আলোকের প্রতিফলন রোধ করে।

রেটিনা

চক্ষুর অংশ – রেটিনা।

অবস্থান – অক্ষিগোলকের পশ্চাদভাগে অবস্থিত অন্তঃআবরক।

প্রধান কাজ – বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠনে সাহায্য করে।

করনিয়া

চক্ষুর অংশ – করনিয়া।

অবস্থান – অক্ষিগোলকের বহিঃআবরকের সম্মুখভাগে অবস্থিত।

প্রধান কাজ – প্রতিসারক মাধ্যম হিসাবে কাজ করে, আলোক রশ্মিকে কেন্দ্রীভূত করা এর কাজ।

আইরিশ

চক্ষুর অংশ – আইরিশ।

অবস্থান – অক্ষিগোলকের সম্মুখভাগে লেন্স – এর ওপরে অবস্থিত।

প্রধান কাজ – তারারন্ধ্রকে অর্থাৎ পিউপিলকে ছোট ও বড় হতে সাহায্য করে।

পিউপিল

চক্ষুর অংশ – পিউপিল।

অবস্থান – আইরিশের মাঝখানে অবস্থিত একটি ছোট্ট ছিদ্র বিশেষ।

প্রধান কাজ – এর মাধ্যমে চোখে আলোক রশ্মি প্রবেশ করে।

লেন্স

চক্ষুর অংশ – লেন্স।

অবস্থান – আইরিশের পশ্চাদভাগে অবস্থিত দ্বিউওলাকার অংশ।

প্রধান কাজ – আলোর প্রতিসরণ ঘটায় এবং আলোক রশ্মিকে রেটিনার ওপর কেন্দ্রীভূত করে।

কনজাংটিভা

চক্ষুর অংশ – কনজাংটিভা।

অবস্থান – করনিয়ার বাইরের আচ্ছাদন।

প্রধান কাজ – করনিয়াকে রক্ষা করে।

অ্যাকুয়াস হিউমার

চক্ষুর অংশ – অ্যাকুয়াস হিউমার।

অবস্থান – করনিয়া এবং লেন্স – এর মধ্যবর্তী প্রকোষ্ঠে অবস্থিত।

প্রধান কাজ – প্রতিসারক মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

ভিট্রিয়াস হিউমার

চক্ষুর অংশ -ভিট্রিয়াস হিউমার।

অবস্থান – লেন্স এবং রেটিনার অন্তবর্তী প্রকোষ্ঠে অবস্থিত।

প্রধান কাজ – প্রতিসারক মাধ্যম হিসাবে কাজ করে।

ব্লাইন্ড স্পট

চক্ষুর অংশ – ব্লাইন্ড স্পট।

অবস্থান – রেটিনার এবং অপটিক স্নায়ুর মিলনস্থলে অবস্থিত।

প্রধান কাজ – এখানে কোনো প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না।

ইয়োলো স্পট

চক্ষুর অংশ – ইয়োলো স্পট।

অবস্থান – তারারন্ধ্রের বিপরীত দিকে রেটিনার ওপর অবস্থিত।

প্রধান কাজ – এখানে প্রতিবিম্ব গঠন সর্বাপেক্ষা ভাল হয়।

সিলিয়ারি বডি

চক্ষুর অংশ – সিলিয়ারি বডি।

অবস্থান – আইরিশ এবং কোরোয়েডের সংযোগ স্থলে অবস্থিত।

প্রধান কাজ – লেন্সের উপযোজনে সাহায্য করে।

রড কোষ

চক্ষুর অংশ – রড কোষ।

অবস্থান – রেটিনায় অবস্থিত।

প্রধান কাজ – মৃদু আলো শোষণ করে।

কোণ কোষ

চক্ষুর অংশ – কোণ কোষ।

অবস্থান – রেটিনায় অবস্থিত।

প্রধান কাজ – উজ্জল আলো ও বর্ণ শোষণ করে।

অশ্রু গ্রন্থি

চক্ষুর অংশ ‌‌- অশ্রু গ্রন্থি।

অবস্থান – অক্ষিকোটরের উপরিতলে যেখানে ঊর্ধ্ব পল্লব যুক্ত থাকে সেখানে অবস্থিত।

প্রধান কাজ – অশ্রু ক্ষরণ করে চোখকে আদ্র রাখা এর প্রধান কাজ।


আরও পড়ুন ক্লিক করে –

স্ক্রাব টাইফাস

বদহজমের কারণ ও প্রতিকার 

বমি বমি ভাব হলে কি করব


আমি উপরে মানুষের চোখের রোগ সমূহ, চোখের বিভিন্ন রোগ এবং মানব চক্ষুর প্রধান অংশগুলির অবস্থান ও তার কাজ সম্পর্কে আলোচনা করেছি।

 আশা করি এই পোস্টটি আপনার উপকারে এসেছে।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই আর্টিকেল টি পড়ার জন্য।

এই আর্টিকেল টি আপনার উপকারে আসলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।


পোস্টটি শেয়ার করুন

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *