বিশ্ব উষ্ণায়ন অনুচ্ছেদ রচনা / Global Warming Bengali Rachana
আপনি কি অনলাইনে বিশ্ব উষ্ণায়ন অনুচ্ছেদ রচনা ( ফ্রী পিডিএফ ) / Global Warming Bengali Rachana ( With Pdf ) খুঁজছেন,
যদি তাই হয়,
আপনি সঠিক পোস্টে এসেছেন।
আমি এই পোস্টটিতে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি – বিশ্ব উষ্ণায়ন রচনা,বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণ , বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলাফল, বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রতিকারের উপায় ইত্যাদি।
আমার এই পোস্টটি বিশ্ব উষ্ণায়ন রচনার দারুন নোট। আপনি পরীক্ষায় যদি এই রচনাটি লিখতে পারেন তাহলে আপনি ফুল মার্কস পাবেন।
নিচে ( ডাউনলোড পিডিএফ ) তে ক্লিক করে বিশ্ব উষ্ণায়ন রচনাটি নিজের মোবাইলে রেখে দাও ।
পোস্টটিকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মন দিয়ে পড়ার অনুরোধ রইল।

Global Warming Bengali Rachana
ভূমিকা –
পৃথিবীর সার্বিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে যে জ্বলন্ত সমস্যা মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে তা হলো বিশ্ব উষ্ণায়ন। মানুষের বসতি এর একমাত্র স্থান পৃথিবী যা আজ অত্যন্ত বিপন্ন। বিপন্নতা জনিত পরিবেশের এই সংকটময়ের নাম দেওয়া হয়েছে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং। এই বিশ্ব উষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর সমস্যা পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে।
বিশ্ব উষ্ণায়নের আশঙ্কা
পৃথিবীর তাপমাত্রা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাল মিলিয়ে ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে। 1850 থেকে হাজার 1900 সালের মধ্যে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেড়েছে 0.5 ডিগ্রী সেলসিয়াস। 1900 সাল থেকে 2000 সালের মধ্যে তাপমাত্রা বেড়েছে 1 ডিগ্রি সেলসিয়াস।
1992 সালে international Government of climate change সংস্থা জানিয়েছে যে মাত্রায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসৃত হচ্ছে তা যদি কমানো না যায় তাহলে 2040 সালে পৃথিবীর তাপমাত্রা আরও 1 ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাবে। মেরু অঞ্চলে এই বৃদ্ধি হবে সবচেয়ে বেশি।
তাপমাত্রা বাড়ার ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাবে, সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস দেখা দেবে, মাটি শুকিয়ে যাবে, ব্যাপকহারে দাবানল দেখা দেবে, বনাঞ্চল ধ্বংসের দিকে চলে যাবে ও পরিবেশ বিপর্যস্ত হবে, বৃষ্টিপাতের হেরফের হবে, ক্ষতিকারক পতঙ্গ ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব বাড়তে থাকবে।
শস্য উৎপাদনে ক্ষতি হবে, অর্থনীতিতে ধস নামবে, মরু অঞ্চলের আয়তন বাড়বে। এল নিনোর মত বিধ্বংসী ঝড়ের প্রভাব বাড়বে। তাপ্রবাহের কারণে হৃৎ যন্ত্র বিকল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। এছাড়া তাপপ্রবাহের ফলে পৃথিবীর অনেক কংস জলের নিচে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা হয়ে যাবে ও সমুদ্রের জীব বৈচিত্র নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন ক্লিক করে – ইংরেজি রচনা লেখার নিয়ম
আরও পড়ুন –মাদার তেরেসার জীবনী বাংলাতে পড়ুন
বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণ
পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধি, মানুষের অপরিণত ভোগের চাহিদা, প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস, শিল্পায়ন, নগরায়ন মানবসভ্যতাকে যেভাবে ধ্বংসের মুখে দাঁড় করিয়েছে তেমনি বিশ্ব উষ্ণায়নের সমস্যাকে তীব্র করেছে।
বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই-অক্সাইড, জলীয় বাষ্প, মিথেন, ক্লোরোফ্লোরো কার্বন ভূপৃষ্ঠ থেকে বিবর্ণ অবলোহিত রশ্মির কিছুটা অংশ ভূপৃষ্ঠে ফেরত পাঠিয়ে দেয় একে বলে গ্রীন হাউস এফেক্ট। শিল্প বিপ্লবের আগে উত্তর মেরুর বাতাসে গাঢ়ত্ব ছিল ২৮০ ppm এবং বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৬০ ppm।
প্রত্যেক বছর এটি বেড়েই চলেছে এই বাড়ার কারণ গুলি হল –
১. জীবাশ্ম জ্বালানির দহনে কার্বন ডাই অক্সাইডের বৃদ্ধি।
২. জীবাশ্ম জ্বালানি অর্থাৎ পেট্রোল, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাসের অতিরিক্ত দহন জৈব বর্জ্য পদার্থের পচন, গবাদিপশুর গোবর ইত্যাদি থেকে মিথেন গ্যাসের বৃদ্ধি।
৩. রং শিল্প, ইলেকট্রনিক্স শিল্প, রেফ্রিজারেশন প্রক্রিয়ায় কার্বন বৃদ্ধি।
৪. নাইট্রোজেন সারের প্রতিনিধিত্ব ব্যবহারে নাইট্রাস অক্সাইডের বৃদ্ধি।
এক্ষেত্রে শিল্পোন্নত দেশগুলি প্রায় ৫০% কার্বন নিঃসরণ এর জন্য দায়ী।
বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলাফল
বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে যে সমস্ত জিনিস গুলো আমাদের এই পৃথিবীর জগতে ঘটতে পারে তা হল –
১. আমাদের পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেরু অঞ্চলের বরফ গলতে শুরু করবে।
২. বরফ গলা জল সমুদ্রের মধ্যে প্রবেশ করে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি করতে থাকবে।
৩. বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করেছে যে কয়েক দশক পর সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চল যেগুলো আছে যেমন ভারত, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, হলান্ড জলের তলায় চলে যেতে পারে।
৪. বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে আমাদের পৃথিবীর বুকে প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড় ও নিম্নচাপের সৃষ্টি হতে পারে।
৫. বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে আমাদের পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে খরা কিংবা বন্যা দেখা যেতে পারে।
৬. বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে কীটপতঙ্গের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এর ফলে কৃষি উৎপাদন কমতে থাকবে।
৭. বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে যে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে তার ফলে মানুষের হৃদযন্ত্রের অসুখ বৃদ্ধি পাবে।
৮. এছাড়া বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের প্রবাল এবং যে সমস্ত প্রাণী সম্পদ আছে তারা নষ্ট হতে পারে।
৯. হিমবাহগুলো শুষ্ক হয়ে মরু অঞ্চলের সৃষ্টি হবে।
১০. বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সর্বোপরি প্রাকৃতিক ভারসাম্য ভীষণভাবে বিঘ্নিত হবে।
বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রতিকারের উপায়
রাষ্ট্রপুঞ্জের একজন সহ-সভাপতি ডেভিডসন সম্মেলনে জানিয়েছিলেন যে ” এখন যা চলছে তা চলতে থাকলে পৃথিবীর বিপদ সাংঘাতিক “।
তাই এই সমস্যার সমাধানে চিন্তাভাবনা চলছে। এই সংস্থা বলেছে শিল্পায়নের আগে পৃথিবীর উষ্ণতা ছিল তার জেরে 2 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধি আটকাতে গেলে 2015 সালে বায়ুমন্ডলে গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ .0445% শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে।
পৃথিবী কে রক্ষা করতে হলে তেল ও কয়লার ব্যবহার কমিয়ে অচিরাচরিত শক্তির উৎস কে ব্যবহার করতে হবে। গ্রিন হাউস গ্যাস বিশেষ করে কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে মাটির মধ্যে আটকে রাখতে হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের উৎস হিসাবে পরমাণু শক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে আর উন্নত দেশগুলির ক্লোরোফ্লোরো কার্বন তৈরি আটকাতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা বৃক্ষছেদন একেবারে বন্ধ করে পৃথিবীর প্রচুর বনসৃজন করতে হবে।
সর্বশেষে একটি কথা বলতে হয় পৃথিবী কে রক্ষা করতে হলে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব থেকে মানুষের সচেতনতাকে বাড়াতে হবে।
উপসংহার
আজ আমাদের পৃথিবীর সবথেকে বড় সমস্যা হল বিশ্ব উষ্ণায়ন। আর এই বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য দায়ী মানুষ অর্থাৎ আমরা নিজেরা। আর আমাদের নিজেদেরকে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব থেকে বাঁচার জন্য সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। আর আমাদের নিজেদেরকে এই বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রতিকার করে আমাদের পৃথিবী কে আবার সুন্দর করে সাজিয়ে তুলে সবাইকে স্বাভাবিক সুস্থভাবে বাঁচার অধিকার করে দিতে হবে। যে প্রকৃতিকে আমরা নিজেরা ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছি সেই পৃথিবী কে পুনরায় স্থিতাবস্থায় আনার দায়িত্ব আমাদের নিজেদের।
আরও পড়ুন ক্লিক করে –
বাংলার ঋতু বৈচিত্র্য প্রবন্ধ রচনা
আশা করি এই পোস্টটি থেকে আপনি – বিশ্ব উষ্ণায়ন অনুচ্ছেদ রচনা / Global Warming Bengali Rachana সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
আশা করি বিশ্ব উষ্ণায়ন রচনার এই পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে এসেছে।
আপনাকে জানাই অনেক ধন্যবাদ রচনার এই পোস্টটি পড়ার জন্য।
এই পোস্টটি আপনার উপকারে আসলে বন্ধুবান্ধবের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।