Mother Teresa Biography In Bengali
আমি Mother Teresa Biography In Bengali / মা মাদারের জীবনীকে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
আমার এই পোস্টটি কেও যদি মাদার তেরেসার বাংলা রচনা হিসাবে ব্যবহার করতে চান ব্যবহার করতে পারেন।
মাদার তেরেসার সুন্দর জীবনী মন দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পড়ার পরেই নিজে থেকে ফেসবুকে শেয়ার করার ইচ্ছা জাগবে।
মাদার তেরেসার জীবনী
বিংশ শতাব্দীর জননী হলেন মাদার টেরিজা। ভারতবর্ষের ইতিহাসে মাদার টেরিজার নাম খুব উল্লেখযোগ্য। বিদেশে জন্মগ্রহণ করলেও ভারতবাসীর কাছে তাঁর অবদান খুবই উল্লেখযোগ্য।
ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল, মার্গারেট নোবেল প্রমুখ নারী যেমন স্মরণীয় তেমনি আর্ত, পীড়িত, গরিব অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো বিংশ শতাব্দীর জননী মাদার তেরেসাও স্মরণীয়।
মাদার তেরেসার জন্ম
মাদার তেরেসার ১৯১০ সালে ২৭ শে আগস্ট যুগোশ্লোভিয়ার স্কোপজা শহরে। মাদার তেরেসা এক স্বচ্ছল কৃষক পরিবারে জন্ম হয়েছিল।
তাঁর আগে নাম ছিল অ্যাগনেস।
মাদার তেরেসার শিক্ষা
প্রথমে তিনি স্থানীয় সরকারি স্কুলে পড়াশোনা করেন। পরে নিজের দেশেই উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।
প্রথমে তিনি স্কুলের শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন সেণ্ট মার্গারেট স্কুলে। তিনি চাকরি জীবনের পাশাপাশি মতিঝিল বস্তিতে সেবার কাজ শুরু করে। তাঁর স্কুল শুরু হয়েছিল মতিঝিল বস্তিতে দু – তিনজন শিশুকে নিয়ে।
১৯২৯ সালে মাদার তেরেসা ভারতে আসেন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর। ১৮ বছর বয়স থেকেই তিনি নিজেকে মানুষ সেবার কাজে বিলিয়ে দেন।
তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতাকে তাঁর সেবার কর্মকেন্দ্র রূপে বেছে নেন।
আরও পড়ুন ক্লিক করে – নেতাজির জীবন কাহিনী বাংলাতে পড়ুন
মাদার হাউস
১৯৪৮ সালে পোপের অনুমতি নিয়ে তিনি একটি ছোট ঘরে সম্পূর্ণভাবে সেবার কাজ শুরু করেন। এই ছোট ঘরটি ক্রিক লেনে অবস্থিত ছিল। সুভাষিণী দাস তাঁর সঙ্গী হয়েছিলেন।
১৯৫০ সালে ৭ ই অক্টোবর ” মিশনারিজ অব চ্যারিটির ” প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল যার মূল কেন্দ্র ছিল লোয়ার সার্কুলার রোডে।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠান টিকে আমরা সবাই ” মাদার হাউস ” বলে জানি।
সেবা কেন্দ্র দেশে বিদেশে
সেবার দিক দিয়ে মাদার হাউসের গুরুত্ব অপরিসীম। জাত পাত বিচার না করে শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলের দিকেই তাঁর সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। ১০ জন সাথীকে নিয়ে শূন্য হাতে মাদার তেরেসা সেবার কাজ শুরু করেছিলেন।
কলকাতার বস্তিগুলোর শিশুদের নিদারুণ দারিদ্র্য ও কষ্ট দেখে তিনি খুব বিচলিত হন।
শিশুদের জন্য তিনি ” মাদার হাউসের ” পাশে গড়ে তোলেন ” শিশুভবন “।
শুধু কলকাতার মধ্যেই তাঁর সেবাকেন্দ্র সীমাবদ্ধ ছিল না ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে তাঁর সেবাকেন্দ্র গড়ে ওঠেছিল।
টিটাগড়, আসানসোল, দিল্লিতে কুষ্ঠ রোগীদের জন্য মাদার তেরেসা সেবাকেন্দ্র তৈরি করেছিলেন।
শুধু ভারতবর্ষ নয় পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে তাঁর সেবাকেন্দ্র গড়ে উঠেছিল। যেমন – আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, পোল্যান্ড, রাশিয়া, যুগোশ্লাভিয়া প্রভৃতি দেশে মাদার তেরেসার সেবাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
সমস্ত পৃথিবী জুড়ে ৪৭০ টির বেশি সেবারকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই ৪৭০ টি সেবাকেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ৫ লক্ষ পরিবারকে খাবার দেওয়া হতো , বস্তির ছেলে মেয়েদের কে পড়ানো হতো, কুষ্ঠরোগী ও বিভিন্ন ধরনের রোগীদের সেবা দেওয়া হতো।
মাদার তেরেসা শুধু অন্ন, বস্ত্র দিয়ে সকল মানুষের সেবা করতেন না তার সঙ্গে ছিল মায়ের মতো ভালোবাসা।
মাদার তেরেসার সেবার স্বীকৃতি
মা মাদার তেরেসাকে অনেক ধনী ব্যক্তি তাঁদের অর্থ, জ্ঞান দিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
নীল পাড় সাদা মোটা শাড়ি দেখলেই বিশ্বের মানুষ চিনে নেই যে তাঁরা মাদার তেরেসার অনুগামীনি সেবিকা।বিশ্বের বহু দেশ মাদার তেরেসা কে ডেকে নিয়ে সম্মানিত করেছেন।
মাদার তেরেসার পুরস্কার লাভ
মাদার তেরেসা ” পদ্মশ্রী ” পেয়েছিলেন জহরলাল নেহেরুর সুপারিশে। তিনি ” ভারতরত্ন ” পেয়েছিলেন।
মা তেরেসা ” নোবেল পুরস্কার ” পেয়েছিলেন। এছাড়া ” ম্যাগসেসাই “, ” নেহেরু পুরস্কার ” পেয়েছিলেন।
কেম্ব্রিজ এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় মাদার তেরেসাকে ” ডক্টরেট ” উপাধি দিয়ে সম্মানিত করেছিলেন। ব্রিটেনের সর্বোচ্চ সম্মান ” অর্ডার অফ মেরিট ” পেয়েছিলেন।
সবথেকে বড়ো কথা মাদার তেরেসা এতগুলো পুরস্কার পাওয়ার পরেও তিনি ছিলেন নির্বিকার। পুরস্কার পাওয়ার আগেও যেমন ছিলেন পরেও ঠিক তেমন ছিল। তাঁর একটাই লক্ষ্য ছিল মানুষের সেবা করা।
মাদার তেরেসার মৃত্যু
১৯৯৭ সালে ৫ ই সেপ্টেম্বর মাদার তেরেসা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
উপসংহার
আজ মাদার তেরেসা চলে গেলেও তাঁর সকলকে দেওয়া মায়ের মতো সেবা, ভালোবাসা আমাদের সকলের হৃদয়ে রয়ে গেছে। শুধু ভারতবর্ষের মানুষ নয় সকল বিশ্বের মানুষের কাছে তিনি স্মরণীয়।
আরও পড়ুন ক্লিক করে – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনী বাংলাতে পড়ুন
আশা করি আপনি Mother Teresa Biography In Bengali \ মাদার তেরেসার জীবনী বাংলায় পড়ে আপনি খুশি হয়েছেন।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ মাদারের জীবনীকে পড়ার জন্য।
মাদারের সেবামূলক জীবনীকে ফেসবুকে বন্ধু – বান্ধবের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইলো।