তোমার বিদ্যালয় জীবন রচনা
আপনি কি অনলাইনে তোমার বিদ্যালয় জীবন রচনা, তোমার বিদ্যালয় অনুচ্ছেদ, বিদ্যালয় জীবনের অভিজ্ঞতা, তোমার বিদ্যালয় রচনা, Tomar Bidyaloy Rachana খুঁজছেন,
যদি তাই হয়,
আপনি সঠিক পোস্টে এসেছেন।
তোমার বিদ্যালয় জীবন রচনা পোস্টটিকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মন দিয়ে পড়ার অনুরোধ রইল।
তোমার বিদ্যালয় রচনা
ভূমিকা
আমি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী । বিদ্যালয় থেকে এবার আমাদের বিদায় নেওয়ার পালা । এই বিদায় নেওয়ার মুহূর্তে অনেক স্মৃতি আজ মনে আসছে ভিড় করে । অনেক চেষ্টা করেও স্কুলটিকে কিছুতেই ভুলতে পারছি না । মনে পড়ে যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথের কথা ” জড়ায়ে আছে বাধা, ছড়াইয়ে যেতে চাই, ছাড়াতে গেলে ব্যথা বাজে “। আজ আমার বিদ্যালয়কে মনে হচ্ছে যেন স্নেহময়ী জননী।
বিদ্যালয় ভবন ও ঐতিহ্য
আমি একটি গ্রামের স্কুলের ছেলে । গ্রামের স্কুল হলেও আমাদের স্কুলটি বেশ পুরনো । আমাদের বিদ্যালয় এর শতবার্ষিকী অনুষ্ঠান হয়ে গেছে । বিদ্যাসাগর মশায়ের অনুরোধে এক জমিদার এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বিশাল খেলার মাঠটি তার সাথে বিদ্যালয়ের জন্য দান করেছিলেন ।
বিদ্যালয় এর ভবনটিতে বড় বড় ঘর, উঁচু উঁচু সিলিং, বড় বড় দরজা জানালা । আলো বাতাস অবাধ খেলে । কত ছাত্র-ছাত্রী এখানে এসে পড়াশুনা করে বড় হয়েছে । তাদের কাছে বিদ্যালয় স্মৃতি হয়ে রয়ে গেছে। ১০০ বছর ধরে এই স্কুলে পড়াশোনা করে গেছে কত ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যায় তারা কয়েক হাজার । ওই হাজার হাজার পুরনো ছাত্রদের কথা ভেবে অতি শৈশবই কেমন যেন আমি রোমাঞ্চ বোধ করতাম । তাদের স্মৃতি আমার মনকে চঞ্চল ও উন্মনা করতো।
আরও পড়ুন নিচে ক্লিক করে –
একটি উৎসবের স্মৃতি প্রবন্ধ রচনা
বিদ্যালয়ে প্রতিদিন
বেলা এগারোটা থেকে আমাদের ক্লাস আরম্ভ হতো । আজও হয় । ঢং ঢং করে ঘন্টা পড়তো । আজও পরে । নিয়মিতভাবে প্রতিদিন ক্লাস আরম্ভ হওয়ার আগে প্রার্থনা সভা হত । চারটে পিরিয়ড হওয়ার পরে থাকতো টিফিনের সময়। টিফিনের পর হতো আরো তিনটি ক্লাস ।
মাস্টারমশাইদের মধ্যে দুজন ছাড়া সবাই ছিলেন বয়স্ক । তবে শিক্ষক হিসেবে সকলেই ছিলেন অতি দক্ষ। আমাদের হেডমাস্টার মশাই ছিলেন বেশ মজার মানুষ । তিনি আমাদের ইংরেজি পড়তেন।
শিক্ষকদের কথা
তবে বছরের পর বছর পড়তে পড়তে যাকে আমি সব থেকে ভালবেসে ছিলাম তিনি হলেন আমাদের বাংলার স্যার রামপ্রসাদ মজুমদার। তিনি বেশ রুচি সম্পূর্ণ মানুষ ছিলেন ।ধুতি, পাঞ্জাবি পরে তিনি বিদ্যালয়ে আসতেন। উনি আমাদের মধ্যে একটু একটু করে তৈরি করেছিলেন সাহিত্যবোধ । ওনার কাছ থেকে আমরা মধুসূদন দত্ত এবং রবীন্দ্রনাথের কবিতা বুঝতে শিখেছিলাম। এবং কিছু কিছু লিখতেও শিখেছি।
আগে যে দুজন তরুণ শিক্ষকের কথা বলেছি এদের ভেতর একজন ছিলেন অংকের মাস্টার মশাই । উনি তখন সবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ করে আমাদের পড়াতে এসেছিলেন । তাই আমাদের সঙ্গে মেলামেশা করতেন একেবারে দাদার মতন । উনি ছিলেন খুবই সহজ ও অমায়িক। তা অংকের মাস্টারমশাই হলেও উনার সাহিত্যবোধ ও রসবোধ কিছু কম ছিল না। উনাকে ঘিরে আমরা কত কথাই না মনে পড়ছে।
অনুষ্ঠান
বাংলার মাস্টারমশাইয়ের মুখেই আমি, প্রথম রবীন্দ্রনাথের ‘ শাজাহান ‘ কবিতার আবৃত্তি শুনেছিলাম বিমুগ্ধ চিত্তে। ২৫ শে বৈশাখ ছিল সেই দিনটি । তখন আমাদের মর্নিং স্কুল । চাঁপা আর বেল ফুলের গন্ধে বাতাস ভারী । রজনীগন্ধা দিয়ে আমরা রবীন্দ্রনাথের ছবি সাজিয়েছিলাম। এইভাবে একটু একটু করে অনেক কথাই ভিড় করে আসছে আমার সদ্য ফেলে আসা বিদ্যালয় জীবন থেকে।
উপসংহার
আমার বিদ্যালয় জীবন নাটকীয় না হলেও ঘটনা বহুল । খেলাধুলা, নাটক অভিনয়, আবৃতি ইত্যাদি সিলেবাস বহির্ভূত কাজে আমার উৎসাহ ছিল প্রচুর। আমি অনেক দুষ্টুমি করতাম বিদ্যালয় এইসব দুষ্টুমির জন্য আমাকে মাস্টারমশাইদের হাতে শাস্তি পেতে হয়েছে। তবে এর জন্য আমি দুঃখবোধ করি না। কারন মাস্টারমশাইরা আমাকে শাস্তি দিয়ে ভালো কাজ করেছেন।
বিদ্যালয়ের বন মহোৎসবের সময় আমরা অনেক গাছ লাগিয়েছিলাম । তাদের কোন কোনটি বেশ বড় হয়েছে, আবার কোন কোনটি নষ্ট হয়ে গেছে। ঠিক কোন গাছটির মতো আমার ভবিষ্যৎ হবে তা জানি না । তবে এখন যা বুঝেছি তা হলো বিদ্যালয়ের সুনামের জন্য আমাকে মানুষ হতেই হবে । বিদ্যালয়ের ঐতিহ্যকে তুলে ধরার দায়িত্ব আমাদের ওপর অনেকখানি বর্তায় ।
আরও পড়ুন নিচে ক্লিক করে –
ছাত্র জীবন সৌজন্য ও শিষ্টাচার রচনা
আশা করি এই পোস্টটি থেকে আপনি – তোমার বিদ্যালয় জীবন রচনা, তোমার বিদ্যালয় অনুচ্ছেদ, বিদ্যালয় জীবনের অভিজ্ঞতা, তোমার বিদ্যালয় রচনা, Tomar Bidyaloy Rachana সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
আশা করি তোমার বিদ্যালয় জীবন রচনার এই পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে এসেছে।
আপনাকে জানাই অনেক ধন্যবাদ রচনার এই পোস্টটি পড়ার জন্য।
এই পোস্টটি আপনার উপকারে আসলে বন্ধুবান্ধবের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।