ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ কারণ ও প্রতিকার
আপনি কি ডেঙ্গু জ্বর – ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান।
যদি তাই হয়, আপনি সঠিক আর্টিকেল এ এসেছেন।
ডেঙ্গু রোগ দেখা দিলেই আমরা অনলাইনে সার্চ করতে থাকি – ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ কারণ ও প্রতিকার, ডেঙ্গু ছোঁয়াচে কিনা, ডেঙ্গু জ্বর কি , ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়, ডেঙ্গু জ্বর কেন হয় ও কীভাবে ছড়াই, এডিস মশা কোথায় থাকে, ডেঙ্গু জ্বর কাদের বেশি হওয়ার সম্ভাবনা ।
তাই আমি আপনাদের বিভিন্ন রকম প্রশ্নের উত্তর নিয়ে এই পোস্টটি নিয়ে এসেছি।
আশা করি এই পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে আসবে।
পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো
ডেঙ্গু জ্বর কি
ডেঙ্গু নামটা শুনলেই আমরা আঁতকে উঠি। ডেঙ্গু ব্লেকবোন ফিভার নামে পরিচিত।এটি একটি ভাইরাস ঘটিত সংক্রামক রোগ।
বিশেষ করে ডেঙ্গু আক্রান্ত কোনও রোগীর রক্তে প্লেটলেটের মাত্রা আচমকা কমতে আরম্ভ করলেই আতঙ্ক শুরু হয়ে যায়।
ডেঙ্গু জ্বর কেন হয় ও কীভাবে ছড়াই
ডেঙ্গু ভাইরাস প্রাথমিক ভাবে এডিস মশা (যাদের গায়ে ডোরাকাটা দাগ থাকে) দ্বারা পরিবাহিত হয়। এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলায় কামড়ায়।
স্ত্রী এডিস মশা প্রথমে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর শরীর থেকে রক্তপান করে এবং প্রায় ৮-১০ দিন পর ভাইরাস মশার লালাগ্রন্থিতে আসে।
তারপর এই সংক্রামিত মশা যখন সুস্থ মানুষকে কামড়ায় মোটামুটি ভাবে ২-৭ দিন পর প্রথম উপসর্গ দেখা দেয়।
এডিস মশা কোথায় থাকে
এডিস মশা সাধারণত বাড়ির চারপাশের যেকোনো জমা জলে (যেমন ডাবের খোলা, প্লাস্টিকের বোতল, টায়ারের ভিতরে জমে থাকা জল , ফুলের টব, ফুলদানি,কুলার,এসি, ফ্রিজের জমা জল ইত্যাদি জায়গায়) ডিম পাড়ে।
ডেঙ্গু জ্বর কাদের বেশি হওয়ার সম্ভাবনা
যে কোন বয়সের ব্যাক্তিই আক্রান্ত হতে পারে। তবে শিশু ও বয়স্ক, যাদের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কম, ডায়াবেটিস বা ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী – এদের ক্ষেত্রে রোগের প্রাবল্য বেশি দেখা যায়।
ডেঙ্গু জ্বর কোন সময় বেশি হয়
সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর- অক্টোবর, অর্থাৎ বর্ষাকালে ভিজে স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া ডেঙ্গুর উপযুক্ত। এই সময়েই বেশিরভাগ মানুষ ডেঙ্গুর শিকার হন।
ডেঙ্গু ছোঁয়াচে কিনা
এই প্রশ্ন বেশিরভাগ মানুষের মনে আসে ।
ডেঙ্গু রোগীর সঙ্গে ওঠাবসা করলে কখনোই ডেঙ্গু হবে না অর্থাৎ ডেঙ্গু মোটেই ছোঁয়াচে নয়। যতক্ষণ না পর্যন্ত ওই সংক্রামিত মশা একজন সুস্থ মানুষকে কামড়ায়।
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণগুলো কি কি
ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে—-
প্রথমত-
সাধারণ ডেঙ্গুতে প্রচণ্ড জ্বর , মাথাব্যথা, সমস্ত গায়ে হাত-পায়ে প্রচণ্ড যন্ত্রনা।বমি,পেটে ব্যাথা এবং শরীরে ছোট ছোট লাল পিঁপড়ের মতো দাগ – এসমস্ত জিনিসগুলোই ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান লক্ষণ।
দ্বিতীয়-
রক্ত পরীক্ষায় দেখা যাবে – রক্তে প্লেটলেট বা অণুচক্রিকার পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। এটি রক্তের এমন একটি কণিকা যা রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
তৃতীয়-
কোনো ব্যাক্তির যদি ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বর হয় তাহলে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্ত ক্ষরণ হতে পারে।
নাক থেকে রক্ত, বমির সাথে রক্ত, অতিরিক্ত ঋতুস্রাব, কালো মল হওয়া কিংবা মল মূত্রের সঙ্গে রক্ত বের হতে পারে।
উপযুক্ত সময়ে চিকিৎসা শুরু না করলে ডেঙ্গু শক শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রতঙ্গ গুলি যেমন – ব্রেন , লিভার , কিডনি , হার্ট , ফুসফুস সম্পূর্ণ রূপে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এই লক্ষনগুলো থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খাওয়া উচিত। দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাওয়া একদম উচিত নয়। কারণ এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়
প্রথমত-
বাড়ির আশেপাশে জল জমতে দেবেন না। বাড়ির ভিতরে এবং বাইরে যে যে জায়গায় জল জমতে পারে সেগুলো শুকনো ও পরিস্কার রাখতে চেষ্টা করুন।
দ্বিতীয়ত-
রাতে এবং দিনের বেলায় অবশ্যই ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করুন।
তৃতীয়ত-
ডেঙ্গুর জীবাণু ধ্বংস করার জন্য বাড়ির আশেপাশে এবং এলাকার চারপাশে প্রতিশোধক মূলক ওষুধ স্প্রে করুন।
চতুর্থ-
জ্বর হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা করান।
ডেঙ্গু কখনো কখনো একটি ভয়ঙ্কর মহামারী রোগ হিসাবে দেখা দিতে পারে। এই বিষয়ে বিশেষভাবে সচেতন হন। আমরা সবাই মিলে এর প্রতিরোধের সচেষ্ট হই।
আশা করি এই পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে এসেছে।
আরও পড়ুন – স্ক্রাব টাইফাস জ্বর সম্পর্কে জানুন।
আরও পড়ুন – ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার উপায়।
এই পোস্টটি থেকে আপনার যে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেয়েছেন তা হলো – ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ কারণ ও প্রতিকার, ডেঙ্গু ছোঁয়াচে কিনা, ডেঙ্গু জ্বর কি, ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়, ডেঙ্গু জ্বর কেন হয় ও কীভাবে ছড়াই, এডিস মশা কোথায় থাকে, ডেঙ্গু জ্বর কাদের বেশি হওয়ার সম্ভাবনা ।
অনেক ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ার জন্য ।
পোস্টটি উপকারে আসলে শেয়ার করতে ভুলবেন না